*বিশেষ ঘটনাবলি  
আর তা হচ্ছে মুসলমান ও বনী হাশেমকে সম্পূর্ণভাবে বর্জন ও একঘরে করে রাখার এক চুক্তিনামা লিখে, যাতে সবাই সাক্ষর করবে, কাবা শরিফের অভ্যন্তরে ঝুলিয়ে দেবে। চুক্তি অনুসারে তাদের সাথে বেচা- কেনা, বিয়ে শাদি, সাহায্য সহযোগিতা, ও লেন-দেন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। এ চুক্তির ফলে মুসলিমরা বাধ্য হয়ে মক্কা থেকে বের হয়ে (শো’বে আবি তালেব নামক) এক উপত্যাকায় গিয়ে আশ্রয় নেন। তাঁরা অবর্ণনীয় ক্লেশ ও দুঃখের শিকার হন সেখানে। ক্ষুধা ও অর্ধাহারের বিষাক্ত ছবোল থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। স্বচ্ছল ও সামর্থবান ব্যক্তিরা নিজেদের সমস্ত ধন-সম্পদ ব্যয় করে ফেলেন। খাদীজা তাঁর সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করেন। বিভিন্ন রোগ ছাড়িয়ে পড়লো। অধিকাংশ লোকই মৃত্যূর প্রায়-দ্বার প্রান্তে এসে দাড়ালেন। কিন্ত তাঁরা ধৈর্য অবিচলতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। তাঁদের মধ্যে একজনও পশ্চাদপদ হননি।
অবরোধ একাধারে তিন বছর স্থায়ী রইল। অতঃপর বনী হাশেমের সাথে আত্মীয়তা আছে এমন কিছু শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি জনসমাবেশে চুক্তি ভঙ্গ করার কথা ঘোষনা করে। চুক্তির কাগজ বের করা হলে দেখা যায় যে সেটা খেয়ে ফেলা হয়েছে। শুধুমাত্র কাগজের এক কোণ যেখানে “বিসমিকা আল্লাহুম্মা” লেখাছিল সেটাই অক্ষত রয়েছে। সংকটের অবসান হল। আর মুসলিম ও বনী হাশেম মক্কায় ফিরে আসেন। কিন্তু কুরাইশরা মুসলিমদের দমন ও মুকাবিলায় সেই রকম রুঢ়তা ও কঠোরতা ক্ষনিকের তরেও পরিহার করেনি।
চন্দ্র দু টুকরা হওয়া :
মুশরিকরা অনেক সময় রাসূলকে অপারগ, অক্ষম সাব্যস্ত করার ফন্দিতে বিভিন্ন অলৌকিক নির্দশন দেখানোর দাবী করতো। আর এধরনের দাবী জানায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তাদেরকে চন্দ্র দু’টুকরো করে দেখানো হয়। কুরাইশরা এ নিদর্শন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দেখতে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা ঈমান গ্রহণ করেনি। বরং তাঁরা বলে, মুহাম্মাদ আমাদেরকে যাদু করেছে তন্মধ্যে এক ব্যক্তি বললো, আমাদের যাদু করলেও সব মানুষকেও তো আর যাদু করতে পারবে না। দূতের অপেক্ষা কর। বিভিন্ন দূত আসলে জিজ্ঞেস করা হয় এবং তাঁরা বলে হ্যাঁ আমরাও দেখেছি। কিন্তু কুরাইশরা নিজেদের কুফরে জেদ ধরে রয়ে গেলো। চন্দ্র দু’টুকরা হওয়া এক বৃহত্তর অলৌকিক ঘটনার পটভূমি ও অবতরনিকা ছিলো। আর তা হল মেরাজের ঘটনা।