
একটি সহজ আমল, যার সওয়াব অনেক বেশি
নিয়ত অর্থ সংকল্প। এটি মনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আমল। এতে নেই কোনো কষ্ট-ক্লেশ, নেই কোনো মেহনত। প্রত্যেক কাজে তা দ্বীনি হোক কিংবা দুনিয়াবি, শুরুতেই নিয়তকে শুদ্ধ করা কর্তব্য। সব কাজ মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য করার সংকল্পই হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। এই নিয়ত মুমিন বান্দার ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রায় সব কাজকেই নেকির কাজে পরিণত করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত উমর ইবনে খাত্তাব রাজিয়াল্লাহু অানহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে যার নিয়ত সে করবে। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের উদ্দেশে হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের জন্যই হবে। আর যে দুনিয়া লাভের জন্য কিংবা কোনো নারীকে বিয়ের উদ্দেশে হিজরত করবে তার হিজরত ওই বিষয়ের জন্যই হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছিল। -সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিম
বর্ণিত হাদিসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস। এখানে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই শিক্ষা দিয়েছেন যে, প্রত্যেক আমলের সওয়াবের জন্য নিয়ত জরুরি। শুধু আমল নয়; বরং প্রত্যেক মানুষকে তার নিয়তের ওপরই প্রতিদান দেয়া হবে। বোঝানোর জন্য নবীজি হিজরতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা বলেছেন। একজন মুহাজির তার হিজরতের পূর্ণ প্রতিদান পায়। পক্ষান্তরে অন্য ব্যক্তি বাহ্যত একই আমল করার পরও বঞ্চিত হয়। এর নিগূঢ় রহস্য মাত্র তিন অক্ষরের নিয়ত শব্দের মধ্যেই নিহিত রয়েছে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের সাহায্যের নিয়তে হিজরত করবে তার হিজরত হবে মকবুল ও প্রতিদানযোগ্য। আর সে পাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অশেষ সওয়াব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পার্থিব কোনো উপকার যেমন ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা প্রেয়সী নারীকে বিয়ে করার নিয়তে স্বজন ও স্বদেশ ত্যাগ করে বাহ্যত তা হিজরত হলেও তা হবে ব্যর্থ ও প্রতিদানের অযোগ্য। একই কষ্ট করার পরও মুহাজিরদের পুরস্কার থেকে সে হবে বঞ্চিত।
বর্ণিত হাদিস থেকে নিয়তের গুরুত্ব ও ফজিলত জানা গেল। উত্তম নিয়তের কারণে মানুষ আমলের সওয়াব পাবে পক্ষান্তরে নিয়তের ভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতার কারণে সে হবে