* রোযার গুরুত্ব 
প্রত্যেক আমল তার জন্য কিন্তু সিয়াম ব্যতিক্রম। কেননা সিয়াম বা রোজা আমার জন্য আর আমিই এর প্রতিদান দেবো’ (বুখারি ও মুসলিম)।
সততা ও ন্যায়পরায়ণতাসহ বিভিন্ন মানবীয় গুণাবলি বিকাশ এবং মানবজীবনের সার্বিক সফলতার জন্য আত্মসংযম-আত্মনিয়ন্ত্রণ একান্ত প্রয়োজন। সংযম,সাধনা ছাড়া মানবিকতার বিকাশ হয় না। এ ছাড়া বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব অর্জনের জন্যও নিজের প্রবৃত্তি ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। আর সিয়াম সাধনার মাধ্যমেই তা অর্জন সম্ভব হয়। ইমাম গাজ্জালী রহ: বলেছেন,
‘দৈহিক কৃচ্ছন্স ও সংযমের সাথে যখন অন্তরের সাধনা যুক্ত হয় তখনই আদর্শ সংযম চেতনার শ্রেষ্ঠতা প্রতিফলিত হয় রমজানের সিয়াম সাধনায়।’
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি রহ: বলেছেন,
‘পাশবিক বাসনার প্রাবল্য ফেরেশতাসুলভ চরিত্র অর্জনের পথে আন্তরায়, তাই এ উপকরণগুলোকে পরাভূত করে পাশবিক শক্তিকে আয়ত্তাধীন করাই এর আসল তাৎপর্য।’
সবর বা ধৈর্যশীলতা মানবজীবনের অপরিহার্য গুণ। ধৈর্যের মাধ্যমে জীবনের যেকোনো বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। সত্য-ন্যায়ের পথে চলতে হলে ধৈর্য ও ত্যাগের প্রয়োজন। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হলে সবর অপরিহার্য। মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করতেও সবর বা ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। মূলত ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রসহ মানবজীবনের সামগ্রিক ক্ষেত্রে ধৈর্য বা সবরের বিশেষ প্রয়োজন। আর রমজান মাসের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সারা দিন প্রচন্ড- ক্ষুধা-তৃষ্ণা সত্ত্বেও পানাহার বর্জন করে রাতে দীর্ঘ সময় তারাবির নামাজ আদায় এবং ভোররাতে সেহরি গ্রহণ ইত্যাদির মাধ্যমে রোজাদারের ধৈর্যের প্রশিক্ষণ হয়। যারা এ প্রশিক্ষণে কামিয়াব হন তাদের জন্য রয়েছে পরম কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। এ জন্য রাসূল সা: বলেছেন,
‘রমজান মাস ধৈর্যের মাস আর ধৈর্যের বিনিময় হচ্ছে জান্নাতের পরম সুখ।’
রমজানের সিয়াম সাধনা এক অনন্য ধর্মীয় ও নৈতিক অনুশীলন। সিয়াম বলতে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকা বোঝায় না বরং অন্যায়-অসত্য, পরনিন্দা-অশ্লীলতা ইত্যাদি পাপাচার থেকে আত্মাকে কলুষমুক্ত করা বোঝায়। রোজার পুণ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য পানাহার বর্জনের সাথে পাপাচার-অশ্লীলতা বর্জনও শর্ত। অন্যথায়